হাদিসে এসেছে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জ্ঞান অর্জন ফরজ।’(ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ২২৪)
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় হাদিস বিশারদরা উল্লেখ করেছেন যতটুকু জ্ঞান অর্জন না করলে শরিয়ত নির্দেশিত হুকুম আহকাম মেনে চলা, হালাল হারাম পার্থক্য করা সম্ভব নয়, ততটুকু জ্ঞান অর্জন করা ফরজ।
সকালের মক্তব শিশুদের নৈতিক শিক্ষার পাঠশালা:
মক্তবে কোরআন শিক্ষার পাশাপাশি মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন ও বড়দের সালাম এবং সম্মান দেওয়া, সুন্দর ও মার্জিত ভাষায় কথা বলাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয় শিক্ষা দেওয়া হয়। শৈশবেই এ আদবগুলো সন্তানদের শিক্ষা দেওয়া না গেলে সে সুযোগ আর হয়ে ওঠে না। বিখ্যাত দার্শনিক ও কবি আল্লামা ইকবাল মক্তব সম্পর্কে যা বলেছেন তার সারমর্ম হলো, যদি এ মক্তব-মাদরাসা না থাকতো, তাহলে মুসলমানের সন্তানরা নৈতিকতা হারিয়ে ইহুদি খ্রিষ্টানের অন্ধ অনুসরণে নিজেদের পরিচয়টুকুও হারিয়ে ফেলতো। মুছে যেতো মুসলমানের আদর্শ ও স্বকীয়তা।
সকালের মক্তবের গুরুত্ব:
সকালের মক্তবে যারা পড়েছে, তাদের সহজে কেউ ইমান হারা করতে পারে না। শিশুর মন নরম কাদামাটির মতো। যার শিশু হৃদয়ে ইমান গেঁথে যায়, পরে সে লোভ-লালসা কিংবা দুনিয়াবি কোনো কারণে ফরজ বিধানগুলো সাময়িক ছেড়ে দিলেও ইমান ছাড়বে না।
দুঃখজনক হলো, কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে সকালের মক্তবের গুরুত্ব ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। সিলেটের একজন ইমাম যিনি দেড়যুগ থেকে ইমামতি ও মক্তবের দায়িত্বে আছেন, সেদিন জানালেন, ২০০৫ সালে যে মক্তবে ১০০ শিক্ষার্থী ছিল, বর্তমানে সেই মক্তবে পড়তে আসে মাত্র ২০ জন শিক্ষার্থী। তাও মাঝেমধ্যে বন্ধ থাকে। শিক্ষার্থীরা বিকেলে আসতে চায়। ভোরে পরীক্ষা-প্রাইভেট থাকে অথবা ঘুমিয়ে থাকে। এ অবস্থা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সকালের মক্তবের গুরুত্ব বাড়াতে হবে। প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তির উচিত এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়া ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
করণীয়:
মক্তবের গুরুত্ব বাড়াতে হবে। মক্তবের ব্যাপারে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, উদ্যোগ নিতে হবে এই পরিস্থিতি উত্তরণে যে যেভাবে হোক, শিশুদের জন্য ভোরবেলা ফ্রি টাইম বের করতে হবে। অথবা ‘আফটার স্কুল’ উপযুক্ত সময়ে তাদের মক্তবমুখী করে আবারও সোনালীি ঐতিহ্যে ফিরে যাওয়া সম্ভব।
আমাদের উদ্যোগ:
মসজিদ ভিত্তিক যে সকল মক্তব আছে সেখানে আমরা বাচ্চাদের জন্য কিছু খাবার দিই। যেমনঃ বিস্কুট, চকলেট, কেক, ললিপপ ইত্যাদি। অর্থাৎ যে খাবারগুলো বাচ্চারা বেশি পছন্দ করে সেগুলো দেওয়া হয়। এতেকরে বাচ্চারা হয়তোবা খাবারের লোভে মক্তবে পড়তে আসবে কিন্তু খাবারের লোভে পড়তে এসে ঠিকই তারা ইসলামী শিক্ষাটা পেয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ
মসজিদ ভিত্তিক যে সকল মক্তব আছে সেখানে আমরা বাচ্চাদের জন্য কিছু খাবার দিই। যেমনঃ
বিস্কুট, চকলেট, কেক, ললিপপ ইত্যাদি। অর্থাৎ যে খাবারগুলো বাচ্চারা বেশি পছন্দ করে সেগুলো দেওয়া হয়। এতেকরে বাচ্চারা পড়তে আসার উৎসাহ পায়।
সকালের মক্তব শিক্ষা হচ্ছে শিশুদের ধর্মীয় মূল্যবোধের পাঠশালা, কোরআন শিক্ষার প্রাথমিক স্তর। সকালের মক্তবে বাচ্চারা তাদের মৌলিক শিক্ষা পায়। যে শিক্ষা অর্জন করা প্রত্যেক মুমিন পুরুষ ও নারীর ওপর ফরজ। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, *‘প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জ্ঞান অর্জন ফরজ।’*(ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ২২৪)